• ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশ র‌্যাব আনসারসহ নিরাপত্তা কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেজাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ঢল

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত জুন ১৯, ২০২৪
পুলিশ র‌্যাব আনসারসহ নিরাপত্তা কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেজাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ঢল

এস.এম.মনির হোসেন জীবন : আজ বুধবার পবিত্র ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন চলছে। ঈদের ছুটিতে রাজধানীর বিনোদনকেন্দ্র গুলোতে ছুটে বেড়াচ্ছে লাখো মানুষ। বিশেষ করে শিশু কিশোর কিশোরী, তরুন- তরুনীসহ সকল বয়সী দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল জাতীয় চিড়িয়াখানায়। প্রবেশ গেট থেকে শুরু করে ভেতর পর্যন্ত রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে দর্শনার্থীদের।

এদিকে, জাতীয় চিড়িয়াখানায় আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঈদ উপলক্ষে ভেতরে ও বাহিরে পুলিশ র‌্যাব আনসার জাতীয় চিড়িয়াখানার নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। জাতীয় চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩ হাজার ২৭৫টি প্রাণী রয়েছে বলে জানা গেছে।

আজ বুধবার জাতীয় চিড়িয়াখানা ঘুরে এবং
দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল ৮টা থেকেই চিড়িয়াখানার প্রবেশ পথগুলোতে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। বেলা যতই বাড়তে থাকে লাইন ও তত দৈর্ঘ্য হতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বাঘ, সিংহ, জলহস্তী, বানর, ক্যাংগারু, কুমির, জিরাফ, জেব্রা, হাতি, ময়ুরের খাঁচায় দর্শনার্থীর ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রবেশ গেটের অনেকটা দূর থেকেই গাড়িগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে গাড়ি থেকে নেমে দর্শানার্থীদের অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে প্রবেশ করতে হচ্ছে চিড়িয়াখানায়। এবারও দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাঘ, হাতি, চিতা, ভল্লুক, বানর ও উল্লুক। এসব প্রাণীর খাঁচার সামনে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। এ ছাড়া মাস তিনেক আগেই চিড়িয়াখানায় জন্ম নিয়েছে দুটি ব্যাঘ্রশাবক। ঈদ সামনে রেখে সেগুলোকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল। সেই দুটি বাঘের বাচ্চা ঘিরে দর্শকদের আলাদা ভিড় লক্ষ করা গেছে।

চিড়িয়াখানা সরেজমিন পরিদর্শক গিয়ে দেখা গেছে, হরিণের খাচাগুলোতে পূর্ণবয়স্ক হরিণ ছাড়াও বিভিন্ন বয়স হরিণছানা খেলা করছিল আপনমনে। এছাড়া পেলিক্যান, লামা, ক্যাংগারু ও আফ্রিকান সিংহের ছোটাছুটি মুগ্ধ করেছে নজর কেড়েছে সবার। আর চিড়িয়াখানার পার্কে শিশুদের ট্রেন ভ্রমণের সঙ্গে বিভিন্ন দোলনায় চড়ার আনন্দ তো ছিলই। ওই অংশের দিকে ছোটদের টানটা একটু বেশিই দেখা গেছে।

জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনে জাতীয় চিড়িয়াখানায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। গরমের তীব্রতা কম থাকলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে মনে করছেন তিনি।

তিনি বলেন, পবিত্র ঈদকে ঘিরে ভেতরে ও বাহিরে আগের চেয়ে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্হা জোরদার করা হয়েছে। চিড়িয়াখানার ভেতরে পুলিশ ও র‌্যাব ছাড়াও আনসার এবং আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা কাজ করছেন।

দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন‘দর্শনার্থীদের জন্য চিড়িয়াখানা পর্যাপ্ত পরিমাণে সুপ্রিম পানির ব্যবস্থা এবং সাময়িক বিশ্রামের জন্য ছাউনি রাখা রয়েছে। দর্শনার্থীরাও যেন প্রাণীদের বিরক্ত করতে না পারে, আমাদের কর্মীরা সেদিকেও খেয়াল রেখেছেন। সব মিলিয়ে এবার ঈদে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীরা আগের চেয়ে বেশি আনন্দ পাবেন, পাচ্ছেন।’

ঈদ উপলক্ষে চিড়িয়াখানায় নতুন কোনো প্রাণী আনা হয়েছে কি না— জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, এই সময়ে নতুন কোনো প্রাণী আনা হয়নি। তবে কিছু প্রাণী আনার জন্য টেন্ডার দিয়েছি। বাজেটের চেয়ে দাম বেশি হওয়ায় তা চূড়ান্ত করা যায়নি।

উত্তরা থেকে সপরিবারে চিড়িয়াখানায় এসেছিলেন জীবন সরকার। ‘আমার ছেলেন বয়স ৫ বছর। তাকে পশুপাখির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে সপরিবারে চিড়িয়াখানা এসেছি। সে চিড়িয়াখানায় এসে বিভিন্ন ধরনের পশুপাখির সঙ্গে পরিচিত হতে পেরে বেশ আনন্দ পাচ্ছে।

গাজীপুর থেকে চিড়িয়াখানায় আসা নাজমা আক্তার জানান, ‘বাচ্চাদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছি। বাচ্চারা বেশ মজা পাচ্ছে। অন্য কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পবিবেশ ভালো। আগের মতো হকারদের কোনো উৎপাত নেই। কোনো সমস্যা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা জাতীয় চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৬১ সালে। ১৮৬ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত চিড়িয়াখানায় এখন ১৩৭ প্রজাতির তিন হাজার ২৭৫টি প্রাণী রয়েছে।

এছাড়া রাজধানী শ্যামলী শিশু মেলা পার্ক, যমুনা ফিউচার পার্ক, ডিয়াবাড়ী ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড, হাতিলঝিলসহ রাজধানীর বিনোদন স্পট গুলোতে নানাবয়সী মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল।

পুলিশ ও র‌্যাবের দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তা জানান, আমরা সততা ও নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালন করছি। নগরবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। আশা করছি কোন ধরনের অসুবিধা হবে না।

January 2025
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031