মোঃ চপল সরদার ঃ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (DNCC) সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা আজও মৌলিক নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। উন্নয়ন কার্যক্রমের ধীর গতি এবং হোল্ডিং ট্যাক্সের উচ্চ হার নিয়ে এসব এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
২০১৮ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় যুক্ত হয় বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, বেরাইদ, ডেমরা, মাণ্ডা, দক্ষিণগাঁও, নাসিরাবাদ, হরিরামপুর, উত্তরাখান, ডুমনি, আমুলিয়া, তলনা, বড়ুয়া, কামারপাড়া, দৌলতপুর, আশকোনা, এবং কায়েতপাড়া ইউনিয়নগুলোর অংশবিশেষ। এসব এলাকার বাসিন্দাদের প্রত্যাশা ছিল, সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে এবং তারা আধুনিক নগর জীবনের সব সুবিধা পাবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র।
সুবিধার অভাবে ক্ষুব্ধ নাগরিকরা
নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় এখনও সুপেয় পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, উন্নত রাস্তাঘাট, পর্যাপ্ত সড়ক বাতি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক সুবিধা অনুপস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত না হয়ে বরং অনেক ক্ষেত্রে আরও খারাপ হয়েছে। জলাবদ্ধতা, ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট এবং ময়লা-আবর্জনার স্তূপ এসব এলাকার নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র।
উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা জনাব করিম মিয়া বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম, সিটি কর্পোরেশনের অংশ হলে আমাদের এলাকায় উন্নয়ন হবে। কিন্তু ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। রাস্তাঘাট যেমন ছিল তেমনই আছে, বরং অনেক জায়গায় আরও খারাপ হয়েছে। মশার উপদ্রব বেড়েছে, আর আবর্জনা ফেলার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই।”
হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে অসন্তোষ
নাগরিক সুবিধা না পেয়েও হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের বাধ্যবাধকতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, যে পরিমাণ সুবিধা তারা পাচ্ছেন, তার তুলনায় হোল্ডিং ট্যাক্সের হার অনেক বেশি। অনেক বাসিন্দা এটিকে “অযৌক্তিক” বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
সাতারকুল এলাকার একজন ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা কোনো সুবিধা পাচ্ছি না, অথচ আমাদের ওপর হোল্ডিং ট্যাক্সের বোঝা চাপানো হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন যদি আমাদের জন্য ন্যূনতম সুবিধাগুলো নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এত উচ্চ হারে হোল্ডিং ট্যাক্স নেওয়ার কী যুক্তি আছে?”
নাগরিকদের দাবি, হোল্ডিং ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে রাখা হোক এবং বিদ্যমান নাগরিক সুবিধাগুলো দ্রুত নিশ্চিত করা হোক। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আন্দোলন কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন কোনো কোনো এলাকার বাসিন্দারা।