জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উদয়পুর ও মাত্রাই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ অভাবের তাড়নায় বিক্রি করেছিলেন কিডনি।
কেউ অটোভ্যান চালক, কেউ ঋণের চাপে, আবার কেউ মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য দালাল চক্রের ফাদে পড়ে বিক্রি করেছিলেন কিডনি। ২০১১ সালের কিডনি বিক্রির ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল
টাকার প্রলোভনে দালাল চক্রের ফাঁদে পরে হারিয়ে ফেলেছে শরীরের একটি কিডনি। দালাল চক্র ৩-৪ লক্ষ টাকায় কিডনি নিয়ে তা বিক্রি করতো দুই থেকে তিন গুন বেশী দামে। পুরো টাকা না দিয়ে কিডনি বিক্রি করা অর্ধেক টাকা নিয়ে লাপাত্তা দালাল চক্র। এতে আরো বিপাকে পড়তে হয় ভুক্তভোগী পরিবারদের ।
অসচ্ছল মানুষ ছিলো তাদের টার্গেট কিডনি বিক্রির পর আর আগের মতো স্বাভাবিক কাজ করতে পারেন না তাঁরা । ঠিকভাবে হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়, প্রায়ই ফুলে যায় চোখ-মুখ।
উদয়পুর ইউনিয়নের দুধাইল গ্রামের কিডনি বিক্রেতা আনিছুর রহমান জানান, মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য টাকার দরকার ছিল তখনই দালালের খপ্পরে পড়ে ৫ লক্ষ্য টাকায় বিক্রির চুক্তি হয়েছিল। তারপর কিডনি বিক্রির আড়াই লক্ষ টাকা পেয়েছেন তিনি বাকি টাকা নিয়ে লাপাত্তা দালাল। কিডনি বিক্রির কারনে বহুবার জেল খেটেছেন তিনি। এখন ভারা ভ্যান চালাই একদিন ইনকাম না করলে সংসার চলে না তাঁর।
একই ইউনিয়নের কাউরাল এলাকার কিডনি বিক্রেতা বায়জিদ জানান, ব্যাক্তিগত সমস্যায় পরে একটা কিডনি বিক্রি করেছি এখন মাঝেমধ্যে হাত পা ব্যথা করে। অটোভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই ।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (ভারপ্রাপ্ত) আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাজনীন নাহার ডেইজী বলেন, একটি কিডনি মানুষের শরীরে থাকলে মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই চলতে পারে তবে একটা কিডনি বিক্রি করছে আবার আরোও একটি যদি নষ্ট হয় তখন তাঁর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন, যদি কোনো দালাল চক্র সক্রিয় হয় আমরা জানতে পারলে আইনি বিধি বিধান মেনে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো । যদি সরকার থেকে কোনো সহযোগিতার নির্দেশনা দেয় আমরা অবশ্যই তাদের সহযোগীতা করবো।